ভূগোল

পোয়েনারি ক্যাসল

মাসউদ আহমাদ

রোমানিয়ান পর্বতমালা। চারপাশের পাহাড়ময় সৌন্দর্যের মধ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি দুর্গ। পোয়েনারি ক্যাসল, যা পরিচিত পোয়েনারি সিটাডেল নামেও। এরকম ভৌগোলিক অবস্থানে এরকম একটি দুর্গনির্মাণ করতে পারে কোনো ‘দুর্ধর্ষ’ শাসকই। মানুষের শখ কতটা অদ্ভুত হতে পারে।

তৃতীয় ভ্লাড নামে একটি লোক ছিল রোমানিয়ার। তাকে ভ্লাড দা এমপালের, ভ্লাড সেপেশ, ভ্লাড ড্রাকুলাও বলা হয়। একবার সুলতান মুহাম্মদ আল-ফাতিহ তার প্রতি শ্রদ্ধানিবেদনের নির্দেশ করেন ভ্লাডকে, কিন্তু ভ্লাড সুলতানের দুজন দূতকে আটক করে হত্যা করে ফেলে। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে এমনকি উসমানি অঞ্চলে এক ম্যাসাকার চালিয়ে দশ সহস্রাধিক তুর্কি ও বুলগেরীয় মুসলমানকে হত্যা করে সে। সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ ওয়ালাচিয়ার শাসন থেকে তাকে হটিয়ে তার ছোট ভাইকে সেখানে বসানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং অভিযান পরিচালনা করেন।

পোয়েনারি দুর্গটি ছিল ভ্লাড দা এমপালেরের অন্যতম আবাস। ত্রয়োদশ শতকে ওয়ালাচিয়ানরা এর নির্মাণকাজ শুরু করেছিল। চতুর্দশ শতকের দিকে এটি ছিল ওয়ালাচিয়ার ‘বাসারাব’ শাসকদের প্রধান দুর্গ। পরের কয়েক দশকে এতে বাস করা পুরোনো লোকেরা চলে গেছে, এসেছে নতুন লোক বারবার, এ দুর্গের নামও সেভাবে পালটেছে। তবে শেষে এটি পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। পঞ্চদশ শতকে দা এমপালের এর পুনর্নির্মাণ করান।

বর্তমানে দুর্গটি একটি জাদুঘর। এ জাদুঘর দেখতে বেয়ে উঠতে হবে ১,৪৮০টি কনক্রিটের সিঁড়ি। দুর্গটি থেকে চারপাশের দৃশ্যে-পরিবেশে অপূর্ব লাগবে ছবিতে দেখা দৃশ্য-সৌন্দর্যের চেয়ে অনেক বেশি। দুর্গটির বহুফুট নিচ দিয়ে চলে গেছে আরগেশ নদীর সর্পিল উপত্যকা। দূরে পর্দাবৃত নারীর চোখের মতো লাগে আরগেশ নদীর সুদৃশ্য বিস্তার।

Back to top button
error: উঁহু, কপি করতে চান নাকি!