
লেখক রাফায়েল সাবাতিনি। ব্ল্যাক সোয়ান জলদস্যুর জাহাজ। টম লিচ এ জাহাজের ক্যাপ্টেন। তাকে ধরা, দস্যুবৃত্তি বন্ধ করা সাধারণ জাহাজগুলোর নিশ্চিন্তে চলাফেরার জন্য খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কিছুতেই সম্ভব হচ্ছিল না টম লিচের নাগাল পাওয়া। টম লিচ ছিল খুব ধূর্ত, কৌশলী, সবসময়ের বিজেতা দস্যু এবং ছিল তলোয়ারের জাদুকর। তার সাথে তরবারি লড়াইয়ে লেগে কারও পক্ষে বেঁচে ফেরা সম্ভব নয়। কিন্তু তা বলে মঁসিয়ে দো বাখনির পক্ষেও। না, না, তা হয় না। তার প্রমাণ তো গল্পের শেষে পেয়েই গেলাম। টম লিচের লাশ পড়ে গেল দো বাখনির হাতে।
অন্য অসংখ্য গল্প-উপন্যাসের মতো এই গল্প বা উপন্যাসটিও এক নারী চরিত্র দিয়ে শুরু। ইংল্যান্ড যাওয়ার পথে মাদাম প্রিসিলা এবং চাচার বয়সী মাদামের প্রেমপিয়াসি অভিভাবক মেজর বার্থোলোমিউ স্যান্ডস যে জাহাজটাতে উঠেছিলেন সেখানেই পরিচয় হয় চার্লস দো বাখনির সাথে। চার্লস দো বাখনি একজন অসাধারণ যুবক। তার রয়েছে প্রখর ব্যক্তিত্ব। দো বাখনিকে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগেছিল মাদাম প্রিসিলার। না, না, এই ভালো লাগা বিশেষ অর্থে নয়।
পরিচয়পর্ব থেকেই মেজর সাহেব খাট্টা হয়ে ছিলেন দো বাখনির ওপর। একে তো লোকটা মাদাম প্রিসিলার মন কাড়ার চেষ্টা করছে, তার ওপর যখন জানা হলো এই লোকটাও একদা দস্যু ছিল, তখন থেকে কি আর মেজর সাহেব চুপ করে থাকতে পারেন! কীভাবে তার সহ্য হতে পারে প্রিসিলার সাথে দো বাখনির মেশামেশি!
তো যাক সে কথা। মেজর সাহেব লোকটা ছিলেন একজন মাথামোটা টাইপের। শেষে শিক্ষাও হয়েছে। তার পরেও। আচ্ছা, আচ্ছা, মেজর সাহেবের কী দোষ। মাথামোটা, বুদ্ধি কিনা মাথায় কম ছিল বলে কথা। আমি কিন্তু তার ওপর রেগে যাইনি কখনো। সে যেমনই হোক, মাদাম প্রিসিলার প্রতি সত্যি সত্যি তার মনে স্নেহ ছিল, আন্তরিকতা ছিল।
একান্তই বাধ্য না হলে মেজর সাহেবকে প্রিসিলার ভাই এবং প্রিসিলাকে নিজের স্ত্রী বলে পরিচয় দিতেন না দো বাখনি টম লিচের কাছে। না হলে কাহিনিটা অন্যরকম হতে পারত। মাদাম প্রিসিলার কী হতে পারত ভাবতে চাই না তা। আমার মনে হয়, এটা একটা রোমান্টিকতাও এনেছে।
উহ! আমি বুঝি বেশি কথা বলে ফেলছি? ‘রোমান্টিকতা’ শব্দের ব্যবহার অনুচিত হলো কি না কে জানে! তা আচ্ছা, বলে ফেলেছি, আর কী!
এবার সমাপ্তি টানা যাক, চার্লস দো বাখনি যে একফোঁটা জলে চুমু খেয়েছিলেন তা পুনরায় স্মরণ করে।
প্রথমবার রিভিউ প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২, ২০১৯