
১৭ জুলাই ২০১৭
ক্লাসে ভূগোল ম্যাডাম পরিষ্কার ভাষায় বললেন, ‘তোমরা এখানে ভাই-বোনের মতো। তা ছাড়া ছেলেদের এখনো প্রেম করার বয়স হয়নি। মেয়েদের হলেও তা তোমাদের সাথে হওয়ার নয়। ওরা তো প্রেম করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে!…তবে মনে রেখো, এই প্রেম সংসার জ্বালিয়ে দেয়। অনেক অশান্তির সৃষ্টি করে। ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখাও আর হয় না।’
বাস্তবে মেয়েরা একই বয়সের হলেও ছেলেদের চেয়ে বেশি পরিণত হয়ে থাকে।
আমি মাথা নিচু করে কথাগুলো শুনলাম। সামনে বই খুলে রেখেছি। এই ধরনের কথাগুলো শুনতেই লজ্জা লাগে। এমনিতেও ক্লাসের সবাই জানে, মেয়েদের প্রসঙ্গ হলে আমিই বেশি দূরে থাকি। অবস্থা এমন, মেয়েদের কারও আমাকে কিছু বলতে হলে সেটা ছেলেদের হয়ে ঘুরে আসতে হয়। এই তো ভূগোল ক্লাসের সুবিধার জন্য আমার একটি মানচিত্রের বই আছে। বইটি দেখার প্রয়োজন হলো। এখন তা আমার কাছ থেকে তারা কীভাবে নেবে? এখন আরেকটি ছেলেকে ডাকতে হচ্ছে, সে যেন আমার কাছ থেকে বইটি চেয়ে নিয়ে তাদেরকে দেয়।
পরশুদিন ভূগোল ক্লাসে ম্যাডামের কাছে কয়েকটি বিষয় জানতে চেয়েছি। আমি এটাই জানতাম না, মংলা বন্দর কোথায়। তারপর জিজ্ঞেস করলাম, উজ্জ্বয়িনী কোথায়। কয়েকবার উচ্চারণ করেও ম্যাডামকে ভালোমতো বোঝাতে পারলাম না। পরে মানচিত্রের বইটি নিয়ে এগিয়ে গেলাম। ম্যাডাম আমাকে ডায়াসে উঠতে বললেন। ওখানে উঠে মানচিত্র মেলে ধরলাম পোডিয়ামের ওপর।
ক্রিস্টোফার কলম্বাস উজ্জ্বয়িনী থেকে পুরো পৃথিবী ঘুরে আসতে চেয়েছিলেন। তার মতে, পৃথিবীর মধ্যবর্তী স্থানটি হলো উজ্জ্বয়িনী। পৃথিবী যেহেতু গোলাকার, কলম্বাসের মতানুযায়ী, উজ্জ্বয়িনী থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে চলতে থাকলে এই উজ্জ্বয়িনীতেই একদিন ফিরে আসা যাবে। আদৌ তিনি এরকম করেছিলেন কি না, এটাও জানার আগ্রহ ছিল।
‘পৃথিবী নয়, সূর্য ঘুরে’ নামে একটি বইয়ের কথা ম্যাডামকে জানালে, তিনি বললেন, ‘দুটোই ঘোরে।’
ইংলিশ চ্যানেল সম্পর্কে এবং বারমুডা ট্রায়াংগেল সম্পর্কেও ম্যাডামকে জিজ্ঞেস করেছি। ম্যাডাম কিছুক্ষণ পরেই রাগী ভাব নিয়ে বলে উঠলেন, ‘এই দ্যাখ! তোকে বলে দিচ্ছি যা-তা বইটই না পড়তে। তুই এইসব বিষয়ের অতিরিক্ত গভীরে ঢুকে যাচ্ছিস।’
বারমুডা ট্রায়াংগেল সম্পর্কে অনেককিছু পড়েছি পাক সাংবাদিক আসেম ওমর সাহেবের একটি বইতে। ম্যাডাম ওখানকার বিষয়টাকে প্রাকৃতিক গোলযোগ বলে মত দিলেন।
সে যাক। মানবিক শাখার এই ভূগোল বিষয়টা বিজ্ঞান শাখার বিভিন্ন বিষয়ের চেয়ে ভারত্বে কোনো অংশে কম নয়।
আজকে আমাদের অর্থনীতি পরীক্ষা ছিল।
মানুষের অভাব অসীম, কিন্তু সম্পদ সীমিত। বিকল্প ব্যবহারযোগ্য এই সীমিত সম্পদ ও অসীম অভাবের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে।
আমার অনেককিছুই লেখার আছে, কিন্তু সময় সীমিত। বিকল্প ব্যবহারের এই সীমিত সম্পদ ও আমার লেখার অনেক চাহিদার মধ্যে সমন্বয় করে সর্বাধিক কল্যাণ পাওয়ার চেষ্টা করতে হচ্ছে। এমন না পারলে আমি অর্থনীতির ছাত্র বলে কলঙ্ক।